ফার্মগেটের ক্যানভাসার ও আমার ১,০০০ টাকার একটা বাঁশ!!!

ফার্মগেটের ক্যানভাসার ও আমার ১,০০০ টাকার একটা বাঁশ!!!
.
আজ থেকে ঠিক ১ বছর আগের ঘটনা!
-২৭শে নভেম্বর, ২০১৮

এডমিশন কোচিং এর জন্য ঢাকায় আসছি! ফার্মগেটের বিজয় সরনির একটা হোস্টেলে থাকি! রুমমেট বাড়িতে চলে গেছে, তাই রুমে একা, সারাদিন পরে পরে ঘুমাচ্ছি! সন্ধা বেলায় হোস্টেল কেয়ার টেকার মামায় দরজায় নক করে -” মামা সারাদিন এভাবে ঘুমাচ্ছেন,এতো ঘুমালে তো অসুস্থ হয়ে যাবেন, এখন উঠে ফ্রেশ হয়ে বাহিরে একটু ঘুরে আসেন, ভালো লাগবে”!

আমিও তার কথায় সায় দিয়ে চট করে রেডি হয়ে বের হয়ে পরলাম! হোস্টেল থেকে বের হলেই ফার্মগেট-মহাখালি হাইওয়ে! রাস্তার পাশে সন্ধেবেলায় অনেক কিছু পাওয়া যায়! আমার আবার স্ট্রিট ফুড অনেক প্রিয়! ঘুম থেকে উঠে অনেক খুদাও লাগছে! ওয়ালেট বের করে দেখি কোনো ভাংতি টাকা নাই, শুধু একটা ১ হাজার টাকার নোট!

মন খারাপ করে হাটতে হাটতে ফ্লাইওভার পার হয়ে আনন্দ সিনেমা হলের সামনে চলে আসছি। এখানে এসে দেখি একদল লোক ঝটলা বেধে আছে! ব্যাপার কি একটু পরখ করে আসি তো! এগিয়ে গিয়ে দেখি যাদু দেখাচ্ছে তাও ফ্রিতে কোনো টাকা নিচ্ছে না!আমার কাছে ঐ ১ হাজার টাকার নোট ছাড়া আর কোনো ভাংতি টাকাও নাই যেহেতু কোনো টাকা নিচ্ছে না ফ্রীতে যাদু দেখাচ্ছে তাহলে এখানে কিছুক্ষন যাদু দেখা যাক তারপর হোস্টেলে ফিরব!!

-কিছুক্ষন যাদু দেখালো, আর সবথেকে আকর্ষণীয় যাদু টি দেখাচ্ছে না,শুধু বকবক করতেছে! ঐ যাদু দেখার জন্য মানুষ অপেক্ষা করতেছে! একপর্যায়ে ওষুধ এর পর্ব এলো
সবাইকে একটু কি জানি দিল আর এটাকে খেতে বললো, আমিও বোকার মত খেয়ে নিলাম!( ঐখানে মানুষজন সবাই একপ্রকার হিপনোটাইজড হয়ে গেছিলো, কিভাবে একটু পর বুঝবেন)

যে যাদু দেখাচ্ছিলো সে চলে গেল, অন্য এক বয়স্ক লোক এসে শুরু করলো-
“যারা যারা এই ওষুধ খেয়েছেন তাদেরকে (আরেকটা ওষুধ দেখিয়ে) এই ওষুধ খেতে হবে না হলে **** এর ক্ষতি হবে, এক যুবক না খেয়ে চলে গেছিলো, পরে তার ঐটা —- হয়ে গেছে”)

-আমার অনেক হাসি পাচ্ছে আবার একটু ভয় ভয় ও লাগতেছে কি না কি হয়!
এক লোক ওষুধ না খেয়েই চলে যাইতে চাইছিলো, তার পা আটকে গেছে, ঐ যায়গা থেকে পা উঠাইতে পারতেছে না! বলতেছে ” এইটা কি করলেন, মাফ করে দেন ভুল হয়ে গেছে”
আমি চলে যাওয়ার মতলব করছিলাম, তা এখন পা বাড়াইতে সাহস পাইতেছি না, যদি পা আটকে যায়!

এরপর একলোক তাকে যাদুকর বলছিলো,
“এখানে কে যাদুকর বললো, দেখেনতো তার প্যান্টে হাত দিয়ে **** আছে কি না”?
যে যাদুকর বলছিলোঃ ” হায় হায় আপনি এইটা কি করছেন, ভুল হয়ে গেছে ফিরিয়ে দেন”

এইটা দেখার পর আমি স্ট্যাচু হয়ে গেছি! আমি কোথায় ফেসে গেলাম, ভাবতেছি ১ হাজার টাকা যাক তবুও ভবিষৎ হারান যাইত ন,
পরে সে সবার পকেট থেকে যত টাকা ছিলো তত টেবিলে রাখতে বললো ‘

আমার কাছে ঐ একটা নোট ই আছে তাই রাখলাম, কি কি জানি দিল
আর হাত দেখে বলল “আপনি তো একটা রোগে আক্রান্ত, বেশি বেশি পানি খাবেন ভালো হয়ে যাবে, জীবন এ অনেক টাকা ইনকাম করবেন কিন্তু রাখতে পারবেন না”? (আমি এসব বিশ্বাস করি না)

এরপর আমার ১ হাজার টাকা থেকে ৮০০ টাকা রেখে আমাকে ২০০ টাকা ধরিয়ে দিল!!!
আর বলল ঃ ” বাবা খুশি হয়ে দিছেন তো”?
আমি মনে মনে(“এখান থেকে যাইতে পারলে বাচি”)

-২০০ টাকা নিয়ে ম্রা খেয়ে হলুদ লাইটের আলোতে হাটতে হাটতে হোস্টেলে ফিরছি!

(প্রতিজ্ঞা করছিলাম জীবনে আর কখনো কোনো দিন এসব দেখতে যাব না)?

©Monjur Ahmed

Note:{
?(এখনো ফার্মগেট গেলে ঐ যায়গায় দেখা যায় অনেক ভিড়, মনে মনে ভাবি আহারে আজ কে যে ম্রা খেতে যাচ্ছে?)

?(আর ঐ যে মাটি থেকে পা তুলতে পারছিলো না আর আরেক লোকের প্যান্টের ভিতর তার **** উধাও হয়ে গেছিলো, এরা সবাই তাদের নিজেদের চক্রের সদস্য , মানুষ কে ভয় আর বিশ্বাস করানের জন্য)

বাই দ্যা ওয়ে, ঐদিন অনেক ভয় পাইছিলাম!?
}

Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin
Monjur Ahmed

Monjur Ahmed

I'm Monjur Ahmed ! Currently Studying Computer Science & Engineering at City University of Bangladesh.

Leave a Replay

Sign up for our Newsletter